(ব্যাংকক) – মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্রমবর্ধমানভাবে নিষিদ্ধ অ্যান্টিপারসোনেল ল্যান্ডমাইন ব্যবহার করছে যা নির্বিচারে সারা দেশে মানুষকে হত্যা ও আহত করে আসছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আজ বলেছে। গত এক বছরে, জান্তা সামরিক বাহিনী এবং বিরোধী ও জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর জোটের মধ্যে লড়াই দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। মায়ানমারের ১৪টি রাজ্য এবং অঞ্চলে ল্যান্ডমাইন হতাহত এবং দূষণ প্রথমবারের মতো নথিভুক্ত করা হয়েছে, যা দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ জনপদকে প্রভাবিত করে ফেলেছে।
সদ্য প্রকাশিত ল্যান্ডমাইন মনিটর ২০২৪-এ, মিয়ানমার অভূতপূর্বভাবে হতাহতের বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষে অবস্থা করেছে, ২০২৩ সালে ল্যান্ডমাইন এবং যুদ্ধের বিস্ফোরক অবশিষ্টাংশ থেকে ১,০০৩ জন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং আহত হবার ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যা আগের বছরের থেকে প্রায় তিনগুণ। ২০২৪ সালে এই হার বাড়তে থাকে, প্রথম ছয় মাসে ৬৯২ বেসামরিক হতাহতের ঘটনা, যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিশু, রেকর্ড করা হয়, যদিও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে অনুমান করা হয়। কম্বোডিয়ার সিয়েম রিপে ২৫-২৯শে নভেম্বর পর্যন্ত মাইন ব্যান ট্রিটির পঞ্চম পর্যালোচনা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলিকে ক্ষতিগ্রস্তদের সমর্থন করার প্রচেষ্টা জোরদার করার সময় মিয়ানমারের অ্যান্টিপারসোনেল ল্যান্ডমাইন ব্যবহারের নিন্দা জানানো উচিত।
"মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অ্যান্টিপারসোনেল মাইনের ব্যাপক ব্যবহার এখন এবং আগামী কয়েক দশক ধরে গ্রামবাসীদের জীবন ও জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলবে," হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া গবেষক শায়না বাউচনার বলেছেন। "বাড়ি, গ্রাম এবং খামারে জান্তার ল্যান্ডমাইন স্থাপন করা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সন্ত্রাস ও ক্ষতি করার জন্য ছক তৈরি করা হয়েছে।"
অক্টোবরে, ল্যান্ডমাইন থেকে বেঁচে যাওয়া চারজন, চিকিৎসা নিয়েছে এমন ছয়জন এবং যারা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করে এমন মানবাধিকারকর্মীর সাক্ষাৎকার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিয়েছে। বেঁচে যাওয়া চারজনই একটি বা উভয় পা-ই হারিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নেওয়া লোকেরা বর্ণনা করেছে যে সৈন্যরা বাড়িঘরের চারপাশে এবং পথের ধারে মাইন লাগিয়েছিল যা যুদ্ধের পরে পরিত্যাক্ত হয়েছিল কিন্তু বাসিন্দাদের নিজ এলাকাই ফিরে আসার পরে সেগুলো তাদেরকে বিপদের সম্মুখীন করেছে। তিনজন ভুক্তভোগী জানান, তারা হয় তাদের গ্রামে ফেরার সময় বা পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত হয়ে ছিলেন।
রাশিয়া, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার সাথে সক্রিয়ভাবে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন ব্যবহার করা মাত্র চারটি দেশের মধ্যে মিয়ানমার একটি। মায়ানমারের সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন ব্যবহার করেছে, তবে জান্তার যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রচারণার মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে নতুন করে এর ব্যবহার বেড়েছে। অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিও অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন ব্যবহার করেছে যা প্রায়শই ইম্প্রোভাইজ করে তৈরি করা হয়েছে এবং জান্তাদের উৎপাদিত মাইনগুলো মাঠ থেকে সংগ্রহ করে মজুদ করে রাখা হয়েছে।
জান্তার ডিরেক্টরেট অফ ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, যা কাপাসা (KaPaSa) নামে পরিচিত, অন্তত পাঁচ ধরনের অ্যান্টিপারসোনেল মাইন তৈরি করে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে বিস্ফোরণ মাইন, স্টেক মাইন, ক্লেমোর-টাইপ ডিরেকশনাল মাইন এবং বাউন্ডিং ফ্র্যাগমেন্টেশন মাইন। স্কুল, চিকিৎসা- ক্লিনিক, মঠ এবং গীর্জা, প্ল্যান্টেশন, সেল টাওয়ার এবং পাওয়ার স্টেশন, বাস্তুচ্যুতি কেন্দ্রগুলো, বন্দর, উন্নয়ন প্রকল্প এবং সেতুতে মাইন স্থাপন করা হয়েছে।
সামরিক ইউনিটগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে শিশুদের সহ গ্রামবাসীদেরকে "মানব মাইনসুইপার" হিসাবে কাজ করার জন্য জড়ো করছে, আবার যেকোনও বিস্ফোরক বিস্ফোরণে তাদেরকে সৈন্যদের সামনে হাঁটতে বাধ্য করছে৷ "কখনও কখনও তারা তাদের সামরিক ইউনিফর্ম পরতে বাধ্য করে," বলেছেন একজন ডাক্তার যিনি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে গিয়েছিলেন। "যদি তারা আহত হয়, তবে তারা কেবল মারাই যাবে।"
একজন সার্জন যিনি কারেনি (কায়া) রাজ্যে একটি ক্লিনিক পরিচালনা করেন, তিনি বলেছেন যে ২০২২ সাল থেকে ১৫ জন বেসামরিক ল্যান্ডমাইন থেকে বেঁচে যাওয়া ৮, ১২ এবং ১৫ বছর বয়সী ৩ শিশু সহ মাইন দ্বারা আহত ৫০ জনেরও বেশি বিরোধীদলীয় যোদ্ধাদের চিকিৎসা করেছেন। "জান্তা সৈন্যরা গ্রামবাসীদের বাস্তুচ্যুত করবে, তারপর গ্রামে, খামারে, ধান এবং ভুট্টার ক্ষেতে এবং সামরিক ক্যাম্পের চারপাশে ল্যান্ডমাইন স্থাপন করবে," সার্জন বলেছেন। “গ্রামবাসী ভয় পায়, কিন্তু যখন ধান ও ভুট্টা কাটার সময় হয়, তখন তাদের ফিরে যেতে হয়। বাচ্চারা তখন তাদের সাথে মাঠে খেলবে। জান্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে খামারে মাইন স্থাপন করে গ্রামবাসীদের ক্ষতি করছে কারণ তাদের কাছে গ্রামবাসী হল শত্রু।”
ডও খিন, ৫৭, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে একটি বাস্তুচ্যুতি শিবির থেকে ফিরে আসার দুই দিন পরে তার টয়লেটের কাছে একটি ল্যান্ডমাইনে পা রেখেছিল। তিনি এক বছরেরও বেশি সময় আগে সামরিক বিমান হামলা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। "আমি অন্য অনেক গ্রামবাসীর মতো পরিষ্কার করতে ফিরে গিয়ে ছিলাম," সে বলল। "আমি ভাবিনি সামরিক বাহিনী আমার বাড়িতে মাইন পুঁতে রাখবে।" তিনি তিন দিন যাবত অজ্ঞান ছিলেন, এই সময় ডাক্তাররা তার পুরো ডান পা, বাম পায়ের নিচে এবং আঙুল কেটে ফেলেন। "আমি কয়েক সপ্তাহ ধরে কাঁদছিলাম এবং খুব বিষণ্ণ ছিলাম.... আমি এখনও ব্যথা অনুভব জড়ে আসছি। সব সময় আমি অসাড়তা অনুভব করি।"
সার্জন বলেছেন যে তিনি গত এক বছরে ল্যান্ডমাইনের দ্বারা আহত সংখ্যা দ্বিগুণ বা তিনগুণ দেখেছেন; হরহামেশাই ঘটে এমন দ্বিতীয় সবচেয়ে আঘাত হল বিমান হামলার ক্ষত যেগুলোর তিনি চিকিৎসা করতেন।
অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের সংঘাত অভ্যন্তরীণভাবে ৩ মিলিয়নেরও বেশি লোককে বাস্তুচ্যুত করেছে, যার মধ্যে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ১.৮ মিলিয়নেরও বেশি রয়েছে। ল্যান্ডমাইন এবং অবিস্ফোরিত অস্ত্রের ক্রমবর্ধমান দূষণ তাদের ফিরে আসার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একজন চিকিৎসক যিনি কারেননি রাজ্যের বাস্তুচ্যুতি ক্যাম্পে চিকিৎসা প্রদান করেন তিনি বলেছেন যে তিনি গত এক বছরে চার বা পাঁচটি শিশু সহ প্রায় চল্লিশ জন ল্যান্ডমাইন থেকে বেঁচে যাওয়া বেসামরিক মানুষকে দেখেছেন। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর আঞ্চলিক ক্ষয়ক্ষতির সাথে ল্যান্ডমাইন দূষণ বেড়ে চলেছে। “যখন সামরিক বাহিনী পিছু হটে, সৈন্যরা একটি পুল কার্টে ল্যান্ডমাইন বহন করে থাকে এবং অনায়াসেই সব জায়গায় পুঁতে দেয়।”
বেসামরিক এলাকায় সেনাবাহিনীর ল্যান্ডমাইন ব্যবহার করা তার দীর্ঘস্থায়ী "ফোর কাট" স্ট্রাটেজির সাথে যুক্ত বলে মনে হয়, যেখানে এটি যৌথ শাস্তির মাধ্যমে বেসামরিকদের বিচ্ছিন্ন এবং আতঙ্কিত করে একটি এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করে থাকে।
“সেনাবাহিনী [অপারেশন] ১০২৭ থেকে আরও মাইন ব্যবহার করে আসছে, ” ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া জান্তা বিরোধী অভিযানের উদ্ধৃতি দিয়ে একজন বিরোধী যোদ্ধা বলেছেন। “সেনাবাহিনী এলাকাবাসীকে দূরে রাখতে আবাসিক এলাকায় আরও মাইন পুঁতে রাখছে। তারা বাড়ির দেয়াল, কম্পাউন্ডের ভিতরে, গ্রাম জুড়ে মাইন পুঁতে রাখছে। তারা তারের সাহায্যে জনগণের গেটগুলোকে বুবি ফাঁদে ফেলছে।”
ল্যান্ডমাইন এবং অন্যান্য বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহার করে অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং সেইসাথে অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রতিষ্ঠিত বিরোধী বাহিনী। “যে কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠী, তারা যে গ্রামই জয় করুক না কেন, তারা মাইন পুঁতে রাখবে,” একজন মানবাধিকার কর্মী বলেছিলেন। “প্রতিরোধের জন্য, মাইনের খনিগুলো একটি এসএসির [SAC -জান্তা] আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য সবচেয়ে সস্তা উপায়।” মায়ানমার সামরিক বাহিনী এবং জাতিগত আরাকান আর্মি উভয়ই এলাকা নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করার সময় মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে। ৪০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ ২০২৪ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যের মংডুতে তার গ্রাম থেকে পালানোর সময় একটি অ্যান্টিপারসোনেল মাইনে পা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা পরে তার বাম পায়ের নিচের অংশ কেটে ফেলেন।
সেপ্টেম্বরে, টাইফুন ইয়াগি থেকে বন্যা এবং ভূমিধস আনুমানিক এক মিলিয়ন লোককে প্রভাবিত করেছিল, যখন উচ্ছেদকৃত ল্যান্ডমাইন এবং অবিস্ফোরিত মাইনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। “বন্যার সাথে সাথে, মাইন গুলো সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে, গ্রাম, আইডিপি ক্যাম্প জুড়ে,” একজন চিকিত্সক বলেছেন যিনি ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলি নির্ণয় করেছেন৷ “বর্ষা ল্যান্ডমাইনগুলিকে কাদার নীচে পুঁতে রাখে যাতে সেগুলি আর দৃশ্যমান না হতে পারে।”
ল্যান্ডমাইনজনিত দূষণ মিয়ানমারের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অর্থনৈতিক পতনকে বাড়িয়ে তুলেছে, যার ফলে লাখ লাখ মানুষ অনাহারে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। একজন মানবাধিকার কর্মী বলেছেন যে গ্রামবাসীরা প্রায়ই আহত হয় যখন ক্ষুধা ও হতাশা তাদের খাবারের সন্ধানে অনিরাপদ এলাকায় যেতে বাধ্য করে থাকে। ল্যান্ডমাইন গবাদি পশুকে হত্যা করছে এবং জমিতে কৃষকদের প্রবেশাধিকারকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে।
জীবিতরা প্রায়শই তাদের পূর্বের জীবিকাতে ফিরে যেতে অক্ষম হয়ে থাকে। “আমি আহত হওয়ার পর থেকে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে, ” বলেছেন ৪৫ বছর বয়সী একজন কৃষক ইউ উইন। একটি বিমান হামলায় তার বাড়ি ধ্বংস হওয়ার এক বছর পর, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটি বিস্ফোরণবিরোধী মাইন থেকে তার বাম পায়ের নীচের অংশটি হারিয়ে ফেলেন। “আমি কাজ করতে পারি না। আমার টাকা বা চাকরি নেই। সামরিক বাহিনী সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।”
মিয়ানমারে দীর্ঘমেয়াদী পরিষেবা এবং পুনর্বাসন, কৃত্রিম সামগ্রী এবং সহায়ক ডিভাইসগুলিতে অ্যাক্সেস অত্যন্ত সীমিত। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, মানুষ প্রায়ই রাবার কাঠ থেকে নিজেদের ক্রাচ তৈরি করে। চলমান সংঘাতের মধ্যে, বেঁচে থাকা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যুদ্ধবিগ্রহ থেকে পালাতে বা জীবন রক্ষাকারী সহায়তা অ্যাক্সেস করতে আরও বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকে।
বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা বিষণ্নতা, অসহায়ত্ব এবং ভয়ের অনুভূতির সাথে লড়াই করার বর্ণনা দিয়েছে।, “আমি বেঁচে থাকলেও আমি আর একজন সাধারণ ব্যক্তির মতো অনুভব করি না।” ২০২২ সালের মার্চ মাসে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে তার ডান পায়ের নিচের অংশ এবং আংশিক শ্রবণশক্তি হারানো একজন বিরোধী যোদ্ধা বলেছিলেন। “আমি যন্ত্রণার মধ্যে আছি। আমার কান থেকে রক্তপাত হতো, কিন্তু এখন আর তেমন নেই.... আমি যখন মাইনে পা রাখলাম, আমি একটি ক্লিক শুনেছিলাম এবং বুঝতে পেরেছিলাম, “ওহ শিট। আমি এখনও সেই ‘ক্লিক’ দ্বারা মানসিক ভাবে আঘাত পাচ্ছি।’”
“কারো কারো মধ্যে আত্মহত্যা প্রবনতা চলে আসে,” সার্জন তার রোগীদের সম্পর্কে বলেছিলেন। “তাদের মানসিক সুস্বাস্থ্যের চাহিদা পূরণের জন্য তাদের কোনো রিসোর্স বা সুযোগ ছিল না। তারা তাদের কাজ, তাদের গতিশীলতা, তাদের বিনোদন হারিয়ে ফেলে। তারা বিশ্বাস করে যে তারা কখনই সুস্থ হবে না।"
মিয়ানমারে মাইন ক্লিয়ারেন্সের প্রচেষ্টা অত্যন্ত সীমিত এবং অ্যাডহক পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। কিছু গ্রামবাসী বলেছেন যে তারা ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিষ্কার করার চেষ্টা করার জন্য একটি ব্যাকহো সংযুক্তি সহ একটি গাড়ি ভাড়া করে ছিলেন। বিরোধী যোদ্ধা বলেছেন যে তার ইউনিট একটি মাইন ডিটেক্টর ব্যবহার করলেও তিনি মাইনের আঘাতে আহত হয়ে ছিলেন।
মোট ১৬৪ টি দেশ ১৯৯৭ সালের মাইন ব্যান চুক্তির পক্ষে, যেখানে মাইন ব্যবহার, উৎপাদন, হস্তান্তর এবং অ্যান্টিপারসোনেল মাইনের মজুদ নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে। চুক্তিতে দলগুলিকে মজুদ ধ্বংস, মাইন-আক্রান্ত এলাকাগুলি পরিষ্কার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা আছে। যদিও মিয়ানমার এই চুক্তির পক্ষে অবস্থান নেইনি, জান্তার এই মাইন ব্যবহার বেআইনি রয়ে গেছে কারণ অস্ত্রগুলি সহজাতভাবে নির্বিচারে, বেসামরিক এবং যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য নির্নয় করতে অক্ষম। নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার বা নির্বিচারে হামলা চালানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যুদ্ধাপরাধের জন্য বিচার করা হতে পারে।
মিয়ানমারের সামরিক এবং অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অবিলম্বে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইনের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে। দাতা গোষ্ঠীদের উচিত স্থানীয় সুশীল সমাজের গোষ্ঠী এবং ল্যান্ডমাইন ঝুঁকি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আন্তঃসীমান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাহায্য করা এবং ক্ষতিগ্রস্থদের এবং তাদের পরিবারকে পুনর্বাসন পরিষেবা, সহায়ক ডিভাইস, মনোসামাজিক সহায়তা, এবং খাদ্য এবং মৌলিক জীবিকার সুযোগসহ সহায়তা প্রদান করা উচিত।
“কম্বোডিয়ায় মাইন ব্যান ট্রিটি কনফারেন্সে সরকারের সভাগুলিকে মিয়ানমারের জান্তা এবং অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে তাদের ল্যান্ডমাইন ব্যবহার বন্ধ করার জন্য চাপ দেওয়ার প্রচেষ্টার সমন্বয় করা উচিত,” বাউচনার বলেছেন।
“মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের একটি বিধ্বংসী অস্ত্রের নিরলস ব্যবহারের জন্য দায়ী করা উচিত যা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ ২৫ বছর ধরে নিষিদ্ধ করে রেখেছে।”