Skip to main content

বাংলাদেশঃ সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিংসতা ও নিপীড়ন

দাতাগোষ্ঠী নাগরিক অবস্থানের সংকোচন, সমালোচকদের উপর কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

১৪ই এপ্রিল, ২০২২ তারিখে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন উদযাপনের সময় স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স "র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন" (র‌্যাব) এর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। © ২০২২ সিপা ভায়া এপি ইমেজেস

(জাকার্তা) - রাজনৈতিক বিরোধী দলীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আক্রমণ বাংলাদেশের ২০২৩ সালের সংসদীয় নির্বাচনের পূর্বে সহিংসতা ও দমন-পীড়নের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিচ্ছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আজ এর ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২৩-এ বলেছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা, যারা নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের জন্য অসম্ভব পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে, বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনী এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের দ্বারা হুমকি, চাঁদাবাজি এবং দুর্ব্যবহারের শিকার।

“ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিক্রিয়া হিসাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কিন্তু দমন-পীড়ন বাড়ানোর মাধ্যমে সেই দাবিগুলিকে অস্বীকার করে আসছে,“ জানিয়েছেন মীনাক্ষী গাঙ্গুলী, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক। দাতাগোষ্ঠী এবং স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারদের জোর দেওয়া উচিত যেনো বাংলাদেশীরা স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের সমর্থন সহকারে নির্ভয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করতে এবং তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে।”

৭১২-পৃষ্ঠার ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২৩-এ, এর ৩৩তম সংস্করণ-এ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রায় ১০০ টির মত দেশে মানবাধিকার কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে। ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসান তার সূচনামূলক প্রবন্ধে বলেছেন যে, বিশ্বে যেখানে ক্ষমতার পরিবর্তন হচ্ছে, মানবাধিকার রক্ষার জন্য বেশিরভাগ গ্লোবাল নর্থ সরকারের একটি ছোট গোষ্ঠীর উপর নির্ভর করা আর সম্ভব নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে ঘিরে বিশ্বের সংঘবদ্ধতা আমাদেরকে লক্ষণীয় সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয় যখন সরকারগুলি বিশ্বব্যাপী তাদের মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা উপলব্ধি করতে পারে। বড় এবং ছোট প্রতিটি দেশের দায়িত্ব তাদের নীতিতে একটি মানবাধিকার কাঠামো প্রয়োগ করা এবং তারপর মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারের জন্য একসাথে কাজ করা।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর কিছু শীর্ষ কমান্ডারের বিরুদ্ধে মার্কিন গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি মানবাধিকার নিষেধাজ্ঞার পর, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং বলপূর্বক গুম মুহূর্তের মধ্যে কমে এসেছিল। তবে, সংস্কারের দিকে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে, সরকার নিষেধাজ্ঞার দিকে ধাবিত করা অভিযোগগুলিকে খারিজ করে দেয় এবং কর্তৃপক্ষ মানবাধিকার রক্ষাকারী এবং জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের বিরুদ্ধে হুমকি এবং ভয় দেখানোর প্রচারণা শুরু করে।

কর্তৃপক্ষ কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) অধীনে সমালোচকদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। এই নভেম্বরে, সেপ্টেম্বর মাসের এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করার জন্য বিরোধীদলীয় নেত্রী সুলতানা আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবের সদস্যরা।

বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মতে, এর সমর্থকদের বিরুদ্ধে অন্তত ২০,০০০ মামলা দায়ের করা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই আসামিরা অজ্ঞাতনামা। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা এই উন্মুক্ত মামলাগুলিকে রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের বাড়িতে অভিযান চালানোর জন্য ওয়ারেন্ট হিসাবে ব্যবহার করেছেন যা প্রকাশ্য রাজনৈতিক হয়রানি এবং ভয় দেখানো বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ ক্রমবর্ধমানভাবে বিদেশে অবস্থানরত ভিন্নমতাবলম্বীদের পিছনে লেগে আছে। নভেম্বরে, ঢাকা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট একটি ফেসবুক পোস্টে "রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার" অভিযোগে প্যারিস-ভিত্তিক ব্লগার, পিনাকী ভট্টাচার্য এবং ঢাকায় আরও দুজনের বিরুদ্ধে ডিএসএ-এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করে। জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে থাকা ভিন্নমতাবলম্বীদের একটি তালিকা তৈরি করেছে যারা "রাষ্ট্রবিরোধী" কার্যকলাপ করছে। কর্তৃপক্ষ প্রবাসী ভিন্নমতাবলম্বীদের আত্মীয়দের টার্গেট করা বাড়াচ্ছে।

অধিকার নামক একটি বিশেষ গ্রুপ যার নিবন্ধন নবায়নকরম প্রত্যাখান করা হয়েছিল, যেখানে এটির নেতৃত্ববৃন্দ, আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসরুদ্দিন এলান, দীর্ঘস্থায়ী হয়রানির অংশ হিসাবে নজরদারি এবং চলমান বিচারের মুখোমুখি হয়ে আসছেন।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলিতে, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা সম্প্রদায়ের-নেতৃত্বে পরিচালিত স্কুলগুলি বন্ধ করে দিয়েছে, নির্বিচারে দোকানগুলি ধ্বংস করেছে এবং চলাচলে নতুন বাধা আরোপ করেছে। শরণার্থীরা বসতিতে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবি) দ্বারা হুমকি, চাঁদাবাজি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের কথা জানিয়েছে। সরকার মানবিক সহায়তাকারী গোষ্ঠীগুলোকে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম শেখানোর অনুমতি দিয়েছে কিন্তু শরণার্থী শিশুদের কোনো স্বীকৃত শিক্ষা দিতে অস্বীকার করে চলেছে।

২০২২ সালে, কর্তৃপক্ষ প্রায় ৮,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসান চরে স্থানান্তরিত করে, যার ফলে প্রত্যন্ত পলি দ্বীপে মোট প্রায় ২৮,০০০ শরণার্থী বসবাস করছে যেখানে তাদেরকে চলাচলের গুরুতর বিধিনিষেধ, খাদ্য এবং ওষুধের ঘাটতি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) জড়িত থাকা সত্ত্বেও, শরণার্থীদের মূল ভূখণ্ডে ফিরে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

 

GIVING TUESDAY MATCH EXTENDED:

Did you miss Giving Tuesday? Our special 3X match has been EXTENDED through Friday at midnight. Your gift will now go three times further to help HRW investigate violations, expose what's happening on the ground and push for change.
Region / Country