Skip to main content

বাংলাদেশঃ চরম মানবাধিকার বিষয়ক লঙ্ঘনের উদ্বেগগুলো প্রত্যাখান করা হয়েছে

কর্তৃপক্ষ অত্যাচার, খুন , জোরপূর্বক গুমের অভিযোগগুলোকে উপেক্ষা করেছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশী লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে থাকা অবস্থায় মৃত্যুর পর ১লা মার্চ, ২০২১-এ বাংলাদেশের ঢাকায় একটি বিক্ষোভের সময় কর্মীরা প্ল্যাকার্ড ধারণ করে।   © 2021 সৈয়দ মাহামুদুর রহমান/নূর ফটো ভায়া এপি

(নিউ ইয়র্ক) – বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার আওয়ামী লীগ জাতিসংঘ, দাতা এবং বেসরকারি সংস্থার ২০২১ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং জোরপূর্বক গুমের প্রমাণ নিয়ে উত্থাপিত উদ্বেগগুলোকে খারিজ করেছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২২ এ জানিয়েছে । কর্তৃপক্ষ অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক এবং এমন কি শিশুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে যারা কোভিড-১৯ মহামারীতে সরকার বা এর প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেছে।

“বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কোভিড-১৯ মহামারীকে ব্যবহার করে একটি হতাশাজনক বার্তা দিয়েছে যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনার শাস্তি দেয়া হবে,“ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর এশিয়া পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন। "তবুও সাংবাদিক, চিকিৎসাকর্মী এবং অ্যাক্টিভিস্টরা স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সেসব বাধাগুলোকে তুলে ধরেছেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অনেক মানুষ এই প্রতিবন্ধকতাগুলোর সম্মুখীন হয়েছেন।"

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার ৩২ তম সংস্করনের ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২২- এর 752- পৃষ্ঠায় প্রায় ১০০টি দেশের মানবাধিকার অনুশীলন পর্যালোচনা করে। নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ প্রচলিত অভিজ্ঞতাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন যে স্বেচ্ছাচারী কর্তৃত্ব মাথা চারা দিয়ে উঠছে। দেশে দেশে, সম্প্রতি বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, এমনকি গ্রেপ্তার বা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্যেও, যা দেখায় যে গণতন্ত্রের আহ্বান এখনও শক্তিশালী রয়েছে। এদিকে, স্বৈরাচারীরা তাদের পক্ষে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা আরও কঠিন বলে দেখতে পাচ্ছে। তবুও, তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক নেতৃত্বদের অবশ্যই জাতীয় ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য এবং গণতন্ত্র যেন তার প্রতিশ্রুত লভ্যাংশ প্রদান করে তা নিশ্চিত করার জন্য আরও ভাল কাজ করতে হবে।

মুশতাক আহমেদ, যিনি একজন লেখক, নয় মাস বিচার পূর্ববর্তী আটকাবস্থার পর কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন- ফেসবুকে কোভিড-১৯ নিয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করায় ঐ সময় তাকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মে মাসে, কোভিড -১৯ মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় অসদাচরণের বিষয়ে রিপোর্ট করার পরে কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে রাজনৈতিক সমালোচকদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও বিচার করেছে, এমনকি সরকারের সমালোচনাকারী প্রবাসী সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদেরও টার্গেট করেছে।

অক্টোবরে, পলি মাটির স্তরসমষ্টির একটি প্রত্যন্ত দ্বীপ যেখানে বিপজ্জনক আবহাওয়া প্রবণ পরিস্থিতি রয়েছে এবং পর্যাপ্ত সেবাসমূহের অভাব রয়েছে সেই ভাষানচর দ্বীপে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কার্যক্রম শুরু করার উদ্দেশ্যে, সরকার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা, ইউএনএইচসিআর-এর সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে দ্বীপের বসবাসযোগ্যতা, নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব এবং সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার মূল্যায়নের জন্য অপেক্ষা করার প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে সেখানে প্রায় ২০,০০০ শরণার্থীকে স্থানান্তরিত করে ফেলেছে। মিয়ানমারে ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থান রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাকে আরও সংকীর্ণ করে তুলেছে।

সেপ্টেম্বরে, কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা মহিব উল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা অধিকার কর্মীকে গুলি করে হত্যা করে। অক্টোবরে, ক্যাম্পের একটি ইসলামিক সেমিনারিতে/ শিক্ষালয়ে হামলায় সাত শরণার্থীকে হত্যা করা হয়েছিল, যার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। রোহিঙ্গা কর্মীরা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির কারণে একদিকে ঝুঁকির মধ্যে থাকে, অপরদিকে সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত দায়ীদের বিরুদ্ধে ডাকা ক্র্যাকডাউনে নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে শরণার্থীদের আটক করতে থাকে।

অক্টোবরে, পুলিশ যখন বিক্ষুব্ধ জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে গুলি চালায়, তখন চারজন ব্যক্তি নিহত হয়েছিল বলে জানা গেছে এবং বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মধ্যে অন্তত আরও তিনজন মারা গেছে। শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নভেম্বরে, ২০১৭ সালে ঢাকায় দুই নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত পাঁচজন পুরুষকে খালাস দেওয়ার পরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিচারক অপরাধের প্রতিবেদন দাখিল করতে এক মাস সময় নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীদের দোষারোপ করেছেন, তাদের চরিত্রের অবমাননা করেছেন এবং বিশেষভাবে সুপারিশ করেছেন যে পুলিশের উচিত ঘটনার ৭২ ঘন্টারও বেশি সময় পরে আসা কোনও ধর্ষণ মামলা দায়ের করতে প্রত্যাখান করা।

নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার উদ্বেগজনক বৃদ্ধি মোকাবেলার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়ে কর্মীরা সারা দেশে বিক্ষোভ করার এক বছরেরও বেশি সময় পরে এই রায় আসে। কর্তৃপক্ষ এখনও একটি যৌন হয়রানি বিল পাস করতে পারেনি, এছাড়া সাক্ষীর সুরক্ষা প্রদান করতে, বা বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে পারেনি।

 

GIVING TUESDAY MATCH EXTENDED:

Did you miss Giving Tuesday? Our special 3X match has been EXTENDED through Friday at midnight. Your gift will now go three times further to help HRW investigate violations, expose what's happening on the ground and push for change.
Region / Country