১৯ শে মে ঢাকায়, বাংলাদেশের কুখ্যাত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) একটি সমাবেশে অভিযান চালিয়ে ২৮ জনকে গ্রেফতার করে, তাদের গণমাধ্যমের সামনে প্রদর্শন করে বলে যে তারা সমকামী এবং মাদকদ্রব্যের ব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত । যে জায়গায় এই গ্রুপটি কিছু মাস ধরে প্রায়ই সমবেত হত সে জায়গার একজন স্থানীয় বাসিন্দার তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব কর্মকর্তারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের অপমানিত করেন- যা একটি ঝুঁকিপূর্ণ সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন।
যদিও সরকার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে -যেমন তৃতীয় লিঙ্গকে আইনগতভাবে স্বীকৃতি দেয়া- কিন্তু বাংলাদেশে যৌন ও লিঙ্গ সংখ্যালঘুরা এখনও চাপের মুখে আছে। “প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে যৌনসঙ্গম করার” দায়ে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশি এলজিবিটি অধিকার সংস্থা বলে যে “এভাবে চেহারা দেখানো জীবন-নাশের কারণ হতে পারে।” এমনকি বিচ্ছন্নভাবে সমকামিতার পক্ষে কাজ করাও অবাঞ্ছিত মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে যা আরও ভয়ংকর কারণ কর্তৃপক্ষ বারবার মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এক বছর আগে বাংলাদেশে দুই সমকামী সমাজকর্মী নেতার নিষ্ঠুর হত্যা সমগ্র সমকামী গোষ্ঠীদের চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সমকামী, উভকামী, এবং ট্রান্সজেন্ডার (এলজিবিটি) জনগণের উপর পুলিশ কর্তৃক শারীরিক ও যৌন আক্রমণের অভিযোগ করেছে । জাতিসংঘের একটি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, সরকার নারী ও শিশুদের সেবায় পুলিশ প্রশিক্ষণ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে, কিন্তু এলজিবিটি জনগণকে রক্ষা করার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে এই বলে যে "যৌন অভিযোজন বাংলাদেশের একটি সমস্যা নয়।"
২০০৪ সাল থেকে পরিচালিত একটি অভিজাত সন্ত্রাসদমন ইউনিট, র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির রয়েছে। যদিও পুলিশ এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেনি, কিন্তু র্যাব গ্রেফতারকৃত পুরুষদের প্রকাশ্যে সমকামী বলে দাবী করে যা তাদের জন্য অপমানজনক এবং হিংস্র আক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দেয়, তা নিঃসন্দেহে ভয়ংকর ও অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু এই ঘটনার পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ছিল।
নাম প্রকাশে অনিকচ্ছুক একটি এলজিবিটি সংস্থা এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বলে “আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং মিডিয়া উভয়ই ভুলে গেছে যে তারা বিভিন্ন যৌন এবং লিঙ্গ পরিচয়ের মানুষদের অপদস্থ করে অপরাধমূলক উপনিবেশিকেই সমর্থন করছে।”
র্যাব পরে ২৮ জনকে পুলিশ ও আদালতের কাছে হস্তান্তর করে, কিন্তু তারা সবাই হেফাজতে থাকে। ২৮ জন বন্দীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের এখন তাদের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি গোপনীয়তা অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।