হিউম্যান রাইটস ওয়াচ – এর অ্যালিসন ডেজ ফোর্জেস পুরস্কারটি সেইসব ব্যক্তিদের বীরত্বকে কুর্নিশ জানায় যাঁরা অন্যের মর্যাদা এবং অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সদা নিয়োজিত থাকেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এইসব সাহসী ব্যক্তিদের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাতে এমন এক পৃথিবী গড়ে তোলা যায় যেখানে হিংসা, বৈষম্য ও নিপীড়ন থেকে মানুষ মুক্তভাবে বেঁচে থাকতে পারে।
ভারতে মনো-সামাজিক অক্ষমতায় (মানসিক স্বাস্থ্যজনিত অসুস্থতা) আক্রান্ত হাজার হাজার ব্যক্তিরা সরকারী মানসিক হাসপাতালে বন্দী হয়ে আছেন, সেইসব প্রতিষ্ঠানের বন্ধ দরজার পিছনে প্রায়শই তাঁরা মুখ বুজে নিগ্রহ সহ্য করেন, তাঁদের সমর্থনে রত্নাবলী রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে চলেছেন। রত্নাবলী নিজের মানসিক স্বাস্থ্যজনিত অবস্থার কারণে অসম্মান, বৈষম্য এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন, তা সত্ত্বেও তিনি তা পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন।
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ এক পরিবারে রত্নাবলী জন্মগ্রহণ করেন, তিনি কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলির সাথে কাজ করেছেন।1997 সালে আকস্মিক মানসিক বিপর্যস্ততার পরে, তাঁর নিয়োগকর্তা তাঁকে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। সরকারী মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে এক আমূল পরিবর্তন আনার জন্য তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছেন, এই মাধ্যম থেকে তাঁকে নিরস্ত করার জন্য ইউনিয়নের দ্বারা তাঁকে মানসিক হাসপাতালে বন্দী হওয়ার অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে হয়েছে। 2000 সালে, রত্নাবলী রায় অঞ্জলি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। অঞ্জলি একটি ছোট সংগঠন যা কিনা সরকারী মানসিক হাসপাতালে মনোসামাজিক অক্ষমতায় আক্রান্ত আবাসিক ব্যক্তিদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করে। শাস্তি স্বরূপ হাসপাতালে একাকী বন্দী রাখা ও সম্মতি ব্যতিরেকে বৈদ্যুতিক শক ব্যবহারের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া সহ পদ্ধতিগত পরিবর্তনের জনিত উদ্ভাবনী কৌশলের কারণে পশ্চিমবঙ্গে অঞ্জলি ব্যাপক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এর পাশাপাশি, রত্নাবলী মনোসামাজিক অক্ষমতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুবিচার পাবার জন্য একটি জাতীয় জোট সহ-প্রতিষ্ঠা করেছেন। রত্নাবলী ও তাঁর সংগঠন ভারতে প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত নারী ও মেয়েদেরদের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ– এর মূখ্য অংশীদার হিসেবে কাজ করেছে।