Skip to main content

বাংলাদেশঃ ভুক্তভুগী এবং একটিভিস্টদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করুন

সহিংসতার পরিবর্তে মানবাধিকারের অবমাননাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনাকে অগ্রাধিকার দিন

RAB members in front of Central Shaheed Minar in Dhaka, Bangladesh, February 20, 2021.  © 2021 Sipa via AP Images

(নিউ ইয়র্ক) – বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কুখ্যাত অত্যাচারী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এর উপর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এর দেয়া নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভুক্তভুগীদের আত্নীয়, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার এবং তাদের পরিবার, এবং হিউম্যান রাইটস সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণের মাধ্যমে, ১২ টি সংস্থা আজ বলেছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং জোরপূর্বক গুম সহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য এবং অসংখ্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১০ই ডিসেম্বর তারিখে আধাসামরিক বাহিনী এবং এর বেশ কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

নিষেধাজ্ঞার পর থেকে, নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে যে র‍্যাব এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স বা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ভুক্তভোগী এবং হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের ফোন কল করে হুমকি প্রদান করছে, তাদের স্থানীয় অফিসে ডেকে পাঠাচ্ছে এবং মধ্যরাতে তাদের কর্মস্থল ও বাড়িতে পরিদর্শনে যাচ্ছে।

এক মামলায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে মার্চ মাসের শুরুর দিক পর্যন্ত, র‍্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থা একজন হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারের এক আত্মীয়কে হয়রানি করেছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকে সমর্থন করার জন্য "রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে" জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। অন্য এক হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার জানায় যে মধ্যরাতে যখন তাদের সন্তানরা ঘুমাচ্ছিলো তখন র‍্যাব কর্মকর্তারা জোরপুর্বক গুমের শিকার হওয়া ব্যাক্তিদের পরিবারের সাথে কাজ করার অর্থসংস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাদের বাসায় এসেছিল। এরপর র‍্যাব কর্মকর্তারা ঐ এক্টিভিস্টের কর্মস্থলে যান এবং তাদেরকে এই বলে হুমকি প্রদান করে যে, “তথ্য গোপন করা নিজের জন্য বরং আরও বিপদকেই ডেকে আনবে।“

সরকার মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও টার্গেট করেছে। ২৫শে জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ফাঁস হওয়া একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে যে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার জন্যে আসা বিদেশি তহবিলের ওপর পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

সরকার হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের হয়রারি করার জন্যে ড্রাকোনিয়ান বা কঠোর আইন এবং আদালতের ব্যবহার করছে। ১৮ই ফেব্রুয়ারি, জহিরুল হক, যিনি একজন সাংবাদিক এবং পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি, তাকে অবমাননাকর ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন (ডিএসএ) এর আওতায় ফেসবুকে সরকার ও পুলিশের সমালোচনামূলক বক্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল একজন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং নির্বাসনে বসবাসরত সাংবাদিক তাসনিম খলিলের বিরুদ্ধে ডিএসএ-এর অধীনে দায়ের করা মামলায় "গুজব ছড়ানো" এবং "সরকার বিরোধী কার্যকলাপে অংশ নেওয়ার” অভিযোগে অভিযোগ গঠন করে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের নেতৃত্ব প্রদানকারী আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। ফেব্রুয়ারিতে, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক মেরি লোলার, ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা বজায় রাখতে আদালতের ব্যর্থতা এবং এর স্বচ্ছতার অভাব উল্লেখ করে এই মামলায় তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন

নবায়নের জন্য অধিকারের আবেদন বেসরকারি সংস্থা অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে ২০১৪ সাল থেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল, যার ফলে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিবেদন পরিচালনা করার জন্য অধিকারের কার্যক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু বছরের পর বছর নিষ্ক্রিয়তার পর, নিষেধাজ্ঞাগুলি জারি হওয়ার পরপরই, সংস্থাটি অধিকারকে একটি চিঠি পাঠায় যাতে সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং নথিপত্রের অনুরোধ করা হয়, যার মধ্যে বিচার বহির্ভূতভাবে নিহত এবং ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়া প্রত্যেকের নাম ও ঠিকানাও চাওয়া হয়েছিল।

১৪ই মার্চ, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণ মানিবাধিকারের কাজকে নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং বাধা দিতে পারে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে যে বাংলাদেশের উচিত "অবিলম্বে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার এবং জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়দের সক্রিয়তা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘের মেকানিজমে সহযোগিতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক কার্যক্রম বন্ধ করা” উচিত। মানবাধিকার সংস্থাগুলিও জাতিসংঘের উদ্বেগের প্রতি সাড়া দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে এবং র‌্যাবের সাথে কাজ করেছে এমন ব্যক্তিকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত করা থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে।

বাংলাদেশের উচিত অবিলম্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার, মানবাধিকার ডিফেন্ডার এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে হয়রানি এবং প্রতিশোধমূলক কার্যক্রম বন্ধ করা, সংস্থা গুলো জানিয়েছে। এর পরিবর্তে, দেশে অব্যাহত থাকা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য পূর্ণ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টাগুলোর ওপর মনোনিবেশ করা উচিত।

সংস্থাগুলো হলঃ

১। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

২। এন্টি ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক

৩। এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইন্সট ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস (এএফএডি)

৪। এশিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া)

৫। এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন

৬। ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট

৭। সিভিকাসঃ ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন

৮। এলিয়স জাস্টিস

৯। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

১০। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের সুরক্ষার জন্য অবসার্ভেটরি কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত)

১১। রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস

১২। ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি,হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের সুরক্ষার জন্য অবসার্ভেটরি কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত)

GIVING TUESDAY MATCH EXTENDED:

Did you miss Giving Tuesday? Our special 3X match has been EXTENDED through Friday at midnight. Your gift will now go three times further to help HRW investigate violations, expose what's happening on the ground and push for change.
Region / Country