জানুয়ারীতে জাতীয় নির্বাচনে বিরোধী দলগুলি অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করার পর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও তার সাথে জোটবদ্ধ দলসমূহ বিপুলভাবে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে। বিরোধীরা একটি নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবী জানিয়েছিল এবং জাতিসংঘের চেষ্টা সহ আলোচনার সমস্ত প্রচেষ্টাগুলি এই অচলাবস্থার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়। নির্বাচনকালীন সহিংসতায় শত শত লোক হতাহত হন।
সুশীল সমাজের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করার ধারাটি চলতে থাকে এবং সরকার একটি খসড়া বিল আনে যেখানে ইতোমধ্যেই চাপে ফেলা বেসরকারী সংস্থাগুলোর উপর এবং তাদের বিদেশী অর্থসাহায্যের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। সরকার একটি নতুন গণমাধ্যম নীতিও চালু করে, যার মাধ্যমে মুক্ত চিন্তা ও কথার উপর অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বিরোধী নেতা-নেত্রী ও সমর্থকদেরকে লক্ষ্যবস্তু করে অপহরণ, হত্যা এবং নির্বিচারে গ্রেফতার চালিয়ে যেতে থাকে। ইতিবাচক যে উন্নতিটি হয়েছে তা হল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক বছর বিচারের আওতার বাইরে থাকার পর, কুখ্যাত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-এর বেশ কয়েক জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের বিরুদ্ধে মে মাসে সাতজন ব্যক্তিকে অপহরণ ও চুক্তিগত খুনের অভিযোগ রয়েছে।
এপ্রিল ২০১৩-তে ঢাকার রানা প্লাজা ধ্বসে পড়ার পর তার শিকার হওয়া এবং সেখান থেকে বেঁচে আসা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও ত্রাণ প্রদানের প্রক্রিয়াটিও ধীর হয়ে আসে, কারণ সেই ভবনে উপস্থিত পাঁচটি কারখানায় যে আর্ন্তজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য পোষাক তৈরী হত তারা এই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে আসা এবং মৃতদের পরিবারগুলির জন্য তৈরী আর্থিক ট্রাস্ট ফান্ডে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থসাহায্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্ঘটনাটির পর, সরকার তার শ্রম আইনে সংশোধন আনে যাতে শ্রমিকদের পক্ষে ইউনিয়ন তৈরী করা সহজ হয়। তবে, শ্রমিকরা জানিয়েছেন যে, তা না করার জন্য মালিক ও ম্যানেজারদের কাছ থেকে প্রচন্ড চাপ আসছে।
নির্বাচনী সহিংসতা
জানুয়ারীর বিতর্কিত নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনাগুলোতে শত শত লোক হতাহত হন। বাংলাদেশের শাসক দল ও বিরোধী দলগুলো উভয়েই এই হিংসার জন্য দায়ী ছিল।
বিরোধী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও জামায়াত-ই-ইসলামী হরতাল ও আর্থিক অবরোধ সফল করার জন্য পেট্রল বোমা ছোঁড়ে। নির্বাচনের আগে এবং পরে, আক্রমণকারীরা বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়ি ও দোকান ভাংচুর করে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, সরকার বিরোধী দলগুলোর উপর প্রত্যাঘাত করে এবং সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত ঘটনাগুলোতে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের শত শত লোককে অভিযুক্ত করে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যরা বিচারবর্হিভূত হত্যা, গুম, নির্বিচারে গ্রেফতার এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির বেআইনী ধ্বংসলীলায় লিপ্ত হয়।
সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম
সমালোচকদের শায়েস্তা করার লক্ষ্যে সরকার বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয় এবং আগের বছরের ধারাটি চলতে থাকে।
জুলাই মাসে সরকার ফরেন ডোনেশন্স (ভোলান্টেরি এক্টিভিটিস) রেগুলেশন আইনের খসড়ার প্রস্তাব করে, যার মাধ্যমে বিদেশী ও আর্ন্তজাতিক সংস্থার বাংলাদেশ অফিস সহ বিদেশী অর্থসাহায্য পাওয়া যে কোন গ্রুপের কার্যধারা ও অর্থসাহায্য নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করা হয়। খসড়া আইনটিতে এনজিও (NGO)-গুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য অর্থহীন ও ভাষার মারপ্যাঁচযুক্ত অপ্রয়োজনীয়, কঠিন ও অনধিকার ধারা রয়েছে।
আগস্ট মাসে, সরকার সমস্ত অডিও, ভিডিও বা যে কোন ভাবে সম্প্রচারিত অডিও-ভিডিও বিষয়াবলীর জন্য একটি নতুন গণমাধ্যম নীতি প্রকাশ করে যার লক্ষ্য হল ভাষার মারপ্যাঁচের মাধ্যমে সমালোচনাকারী প্রতিবেদনগুলোকে উলেখযোগ্যভাবে সংকুচিত করা। ২০১৩ সালে সমালোচনাকারী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছু টেলিভিশন ও সংবাদ সংস্থা ২০১৪ সালেও বন্ধ থাকে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলির জবাবদিহিতা
এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জে সাতজন ব্যক্তির অপহরণ ও চুক্তিগত খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্যাপক গণরোষের পর সরকার কুখ্যাত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-এর বেশ কয়েক জন সদস্যকে গ্রেফতার করে।
যদিও সরকার দাবী করেছে যে এই সংস্থাটি তৈরীর পর বিভিন্ন আইনভঙ্গকারী আচরণের জন্য প্রায় ২,০০০ জন র্যাব সদস্যকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের ঘটনার আগে বিচারবর্হিভুত হত্যা, অত্যাচার বা নির্বিচারে গ্রেফতারের জন্য একজন ব্যক্তিও দোষী সাব্যস্ত হয়নি। স্বাধীন সংস্থাগুলি অনুমান করছে যে, গত ১০ বছরে র্যাব প্রায় ৮০০ বেআইনী হত্যা সংঘটিত করেছে। পুলিশ ও বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ সহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ব্যাপারে অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত বা দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি।
শ্রম অধিকারসমূহ
এ বছরের এপ্রিলে রানা প্লাজা ধ্বসে পড়ার এক বছর পূর্ণ হয়, যেখানে ১,১০০ তৈরি পোশাক শ্রমিক মারা যান এবং প্রায় ২,৫০০ জন আহত হন। ছয় মাস আগে, তাজরিন ফ্যাশনসের কারখানায় এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ১১২ জন মৃত্যুবরণ করেন। সেখান থেকে বেঁচে আসা ব্যক্তিরা এবং আত্মীয়স্বজনরা জানিয়েছেন যে, তারা জীবন-পরিবর্তনকারী আঘাত, প্রবল মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন এবং তারা তাদের আয় করার ক্ষমতা হারিয়েছেন।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)-এর মাধ্যমে একটি ক্ষতিপূরণ ফান্ড তৈরী করা হয় যার উদ্দেশ্য ছিল $৪০ মিলিয়ন বা ৪ কোটি ইউএস ডলার জমা করা। কিন্তু এক বছর পর, মাত্র $১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি টাকা সংগৃহীত হয়, যেখানে বেশীর ভাগ অর্থসাহায্যই একটি কোম্পানি থেকে আসে।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর, বাংলাদেশ সরকার ও পশ্চিমী খুচরো বিক্রেতারা ৩,৫০০টি গার্মেন্টস কারখানার জন্য একটি পরিদর্শন নীতি তৈরী করে যার উদ্দেশ্য ছিল কাঠামোগত সংহতি ও অগ্নি ও বৈদ্যুতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। উত্তর আমেরিকার খুচরো বিক্রেতাদের একটি দল প্রায় ৫৮৭টি কারখানা পরিদর্শন করে। প্রধানত ইউরোপীয়ান খুচরো বিক্রেতাদের তৈরী আরেকটি দল প্রায় ১,৫৪৫টি কারখানার পরিদর্শন করে।
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময়, তারা তাদের পরিদর্শনগুলির বিবরণ প্রকাশিত করলেও, সরকার নিজেদের করা বাকী পরিদর্শনগুলোর তথ্য প্রকাশ করেনি। সরকার এর শ্রম আইনগুলোর সংশোধন করেছে যাতে শ্রমিকদের পক্ষে ইউনিয়ন তৈরী করা ও তাতে যোগ দেওয়া তাদের জন্য সহজ হয়। তবে, শ্রমিকরা বলেছেন যে, তা না করার জন্য তাদের উপর প্রচন্ড চাপ প্রদান করা হচ্ছে - যার মধ্যে রয়েছে ম্যানেজারদের দ্বারা ভীতি প্রদর্শন, খারাপ ব্যবহার এবং এমনকি মেরে ফেলার হুমকি।
ঢাকার একটি আবাসিক এলাকা হাজারীবাগের ট্যানারী শ্রমিকরা মারাত্মক বিষাক্ত ও বিপজ্জনক কাজের পরিবেশের সমস্যায় ভুগে চলেছেন। যদিও সাভারে একটি নির্ধারিত শিল্প এলাকায় নতুন ট্যানারী কারখানা তৈরীর কাজ শুরু করেছে, তাদের পরিকল্পিত স্থানান্তরের বিষয়টি বিলম্বিত হয়েছে। কাছাকাছি বস্তিগুলোর বাসিন্দা ট্যানারীগুলো থেকে বায়ু, জল ও মাটির প্রচন্ড দূষণের কারণে বিভিন্ন রোগব্যাধি হওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন। সরকার হাজারীবাগের ট্যানারীগুলোর ক্ষেত্রে তাদের শ্রম ও পরিবেশগত আইনসমূহ প্রয়োগ না করার অপ্রকাশ্য নীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীরা, বিশেষতঃ মধ্যপ্রাচ্যে নির্মাণশিল্পে ও ঘরের কাজে কর্মরত শ্রমিকরা প্রায়ই তাদের চুক্তিগুলোর ব্যাপারে নিয়োগকারীদের দ্বারা প্রতারিত হচ্ছেন। তাদের মাত্রাতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে, যার জন্য তারা ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছেন এবং বিদেশে নির্যাতনের ঝুঁকিতে পড়ছেন, যার মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া, বেতন না দেওয়া, বিপজ্জনক কাজ ও জবরদস্তি কাজ করানো। খুব কম ক্ষেত্রেই অভিবাসীরা তাদের দূতাবাসগুলির কাছ থেকে সহায়তা পেয়ে থাকেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
বিচারে ত্রুটি থাকার গুরুতর উদ্বেগ চলতে থাকা সত্ত্বেও, ১৯৭১-এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধের সময় গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার চলছে।
বিচারের বাদী পক্ষ মাননীয় আইনমন্ত্রীর কাছে এই ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা সংশোধন করে এটিকে পুরো জামায়াত-ই-ইসলামী দলকে অভিযুক্ত করার ক্ষমতা প্রদানের জন্য আবেদন জানিয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, জামায়াত-ই-ইসলামী দলটি পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়ার আন্দোলন বিরোধিতা করেছিল। এই দাবীটি বিচারকরা এখনও বিবেচনাধীন রেখেছেন।
নভেম্বরে, সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের জন্য প্রদানকৃত মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে, যদিও এই মামলায় ন্যায্য বিচার সংক্রান্ত গুরুতর উদ্বেগ ছিল।
নারী
বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের বিষয়টি এখনও একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়। জুলাই ২০১৪-এ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন গার্ল সামিটে বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত আইনের সংস্কার করা, ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সের বাল্য বিবাহ বন্ধ করা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্য বিবাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার শপথ নেন। কিন্তু অক্টোবরে তার ক্যাবিনেট থেকে, মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার প্রস্তাব আসে, যা তার শপথের বিপরীত ছিল।
বিয়ে, বিচ্ছেদ ও বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ন্ত্রণকারী বাংলাদেশের ব্যক্তিগত স্থিতি আইনে পরোক্ষভাবে মহিলাদেরকে বঞ্চণা করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার মহিলা ও মেয়েদের জন্য সাম্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি বিশদ পর্যালোচনার কাজ গ্রহণ করার কোন ইচ্ছা প্রদর্শন এখন পর্যন্ত করেনি।
শিশু অধিকার
নির্বাচনী সহিংসতা চলাকালীন সময়ে বিরোধী সমর্থকদের নির্বিচারে ছোঁড়া পেট্রল বোমা ও অন্যান্য আক্রমণে অনেক শিশু আহত হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে, বিরোধী গোষ্ঠীগুলো এই আক্রমণগুলি করার জন্যও শিশুদের নিয়োগ করে। যদিও বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়, সরকার-বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ইচছাকৃতভাবে শিশুদেরকে ক্ষতির মুখে ফেলার জন্য এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকার এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।
মৃত্যুদন্ড
বাংলাদেশ মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত-ই-ইসলামী দলের একজন নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে একটি চূড়ান্ত রায় প্রদানের পর ডিসেম্বর ২০১৩-তে ফাঁসীতে ঝোলানো হয়।
প্রধান আর্ন্তজাতিক পক্ষসমূহ
কয়েকটি দেশ নির্বাচনের সময়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ব্যাপারে নিন্দা প্রকাশ করেছে। এই সময়টি ছিল দেশের স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক। আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায় জানুয়ারীর এক-পক্ষীয় জাতীয় নির্বাচন আটকানোর জন্য একটি আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সহ বাংলাদেশের উপর কিছুটা প্রভাব থাকা দেশগুলি একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়। জাতিসংঘের মধ্যস্থতা করার প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সহ কয়েকটি দেশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কর্তৃক আইন লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে তারা র্যাব ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা প্রক্রিয়া স্থাপনের জন্য র্যাবের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
রানা প্লাজা ধ্বসে পড়ার পর, বাংলাদেশ থেকে পণ্য তৈরী করানো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোকে গভীর আর্ন্তজাতিক নজরদারীর মুখে পড়তে হয়।
বাংলাদেশের দুই বৃহত্তম বিদেশী তৈরি পোশাকের বাজার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়ে সরকার ও গার্মেন্টস শিল্পকে আর্ন্তজাতিক শ্রম মানদন্ডগুলো প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জেনারালাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) নীতির আওতায় বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সুবিধাগুলোকে স্থগিত রাখা অব্যাহত থাকে। জুলাই ২০১৩-তে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সতর্ক করে যে, বাংলাদেশ যদি শ্রম অধিকার ও কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষার বর্তমান অবস্থার উন্নতি না করে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এর শুল্ক-মুক্ত ও কোটা-মুক্ত বাজার গ্রহণের সুবিধা হারাতে পারে। তবে এই বিষয়ে আর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
বার্মা সীমান্তে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সাথে কাজ করা ইউনাইটেড নেশন্স হাই কমিশন ফর রেফিউজিস (ইউএনএইচসিআর) এবং অন্যান্য মানবতাবাদী সংস্থাগুলো সরকারের কাছ থেকে চাপের সম্মুখীন হচ্ছে এবং তারা ক্যাম্পগুলোতে সীমিতভাবে যেতে পারছে।