২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শেষনাগাদ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বিরোধীদলের প্রধান সদস্যদের আটকে রেখেছে অথবা জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে, হাজার হাজার বিরোধীদলীয় সমর্থকদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের উপর আঘাত হেনে সরকার বাক স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক মান লঙ্ঘন করেছে।
আন্তর্জাতিক সমালোচনা সত্ত্বেও, কর্তৃপক্ষ চিত্রগ্রহণ-কর্মী শহীদুল আলমকে ১০৭ দিনের জন্য আটক করে রাখে। আল জাজিরা টেলিভিশনের একটা সাক্ষাতকারে এবং অগাস্ট মাসে ফেইসবুকে শহিদুল আলম সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করেছেন। বাংলাদেশ একটি অস্পষ্ট আইন প্রণয়ন করেছে যা বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক যন্ত্রগুলির ব্যবহার করাকে নিয়ন্ত্রন করে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী যারা ২০১১ সালের আগস্টের শেষের দিকে প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারের সামরিক বাহিনী দ্বারা মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে পালিয়ে আসে, তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য সরকার মানবাধিকার, চিকিৎসা ও অন্যান্য সেবার যথাযথ ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশে এখন প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বসবাস যেখানে নতুন এবং পুরাতন উভয় শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের প্রতিনিয়ত আগমন মানবতাবাদী ও সরকারী সাহায্য সংস্থাগুলির উপর গুরুতর চাপ সৃষ্টি করছে।
এপ্রিল মাসে রানা প্লাজা পোশাক কারখানার ধ্বসের পাঁচ বছর পূর্তি হয়, যেখানে ১১০০ শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিন্তু বাংলাদেশ অ্যাকর্ড এবং বাংলাদেশ অ্যালায়েন্সের মত বহিরাগত আন্তর্জাতিক সংস্থার মতাতমত গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। অ্যাকর্ড একটি সংস্থা যা রানা প্লাজা ধ্বসের পর আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
বিরোধীদল, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারী, ছাত্র, এবং গণমাধ্যমের উপর আক্রমণ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা বা সমালোচকদের দমন করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। বিরোধ দলের সমর্থক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের বিশিষ্ট সদস্য, ছাত্র এবং এমনকি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এর অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালত দীর্ঘদিনব্যাপী স্থগিত মামলা দ্রুত পরিচালনা করে এবং ফেব্রুয়ারিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে জেলে পাঠানো হয়। বেগম জিয়ার সমর্থকরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা একই সামরিক সমর্থিত সরকার দ্বারা করা হয়েছিল তবে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর, হাসিনার বিরুদ্ধে সব মামলা খারিজ করা হয়, কিন্তু বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রুত পরিচালনা করা হয়।
হাজার হাজার বিরোধীদলীয় সমর্থক এবং জ্যৈষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। সংবাদপত্রগুলি জানায় যে মৃত ব্যক্তি বা হাসপাতালে অসুস্থ ব্যক্তিদের নামেও এই মিথ্যা মামলা করা হয়।
জুলাই মাসে, দ্রুত গতির বাসে চাপা পড়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর, বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবীতে প্রতিবাদ শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করে যে আওয়ামী লীগ ও তাদের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা লাঠি ও চাপাতি দিয়ে ছাত্রদের উপর বর্বর হামলা চালায়। কর্তৃপক্ষ নির্যাতনকারিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি, বরং প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের আটক করেছে। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সমর্থন বা ছাত্রদের উপর সরকারের আক্রমণের সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন, তাদের পুলিশ “উস্কানিমূলক” মন্তব্য ও সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করে।
ফটো সাংবাদিক সাংবাদিক শহীদুল আলম, যিনি প্রতিবাদকারীদের উপর আক্রমণের ঘটনা তুলে ধরেছিলেন, আগস্টের দিকে তাকে আটক করা হয়েছিল। তিনি বিক্ষোভের সময় যে সহিংসতা দেখেছিলেন তা বর্ণনা করে গণমাধ্যমে সাক্ষাতকার দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, তাকে হাজতে প্রহার করা হয়েছে। অন্যান্য সাংবাদিকেরা যারা এ আন্দোলনের খবর প্রকাশ করেছেন, তাদের উপরও আক্রমণ করা হয়। কিছু আন্দোলনকারীদের গোপনে আটকে রাখা হয় যার ফলস্বরুপ জোরপূর্বক নিখোঁজের হার বেড়ে যায়। শহিদুল আলমকে নভেম্বরের শেষদিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল যদিও তার বিরুদ্ধে এ মামলাটি চালিয়ে যাওয়া হয়।
বাক স্বাধীনতা প্রকাশ ও প্রচার
সেপ্টেম্বরে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করে, যা সকল তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যম নিরীক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই নতুন আইনটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু এই নতুন আইন এখনও পুরাতন ধারা অনুযায়ী প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং নতুন এই সংযোজন বাক স্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। ইতোমধ্যে, শত শত মানুষের বিরুদ্ধে তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশের কারণে
অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিদেশী তহবিল ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কারণে মানবাধিকার সংস্থাগুলি চাপের মধ্যে রয়েছে। সাংবাদিকদের সরকারের কোন সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকার জন্য হুমকি ও ভয় দেখানো হয়েছে।
র্যাব ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের আইন থেকে অব্যাহতি.
মে মাসে, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং অল্প সময়ের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ১০০ জনকে হত্যা করে। শেখ হাসিনা আরও ঘোষণা করেছেন যে আরও ১০০০ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) দ্বারা বিচার বহির্ভূতভাবে একজনের হত্যার অডিও রেকর্ডিং এবং সহিংসতার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ দায়ীদের তদন্ত ও বিচার করতে ব্যর্থ হয়।
জোরপূর্বক নিখোঁজ ও বিচার বহির্ভূত হত্যা চলতে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনী বেআইনি হত্যাকাণ্ড ঢাকার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে একই অজুহাত দিয়ে আসছে যে তাদের মৃত্যু বন্দুক যুদ্ধ অথবা গুলি বিনিময় কালে ঘটেছে।
শরণার্থী
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের এক বছর পর প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।
দ্রুতগতিতে নির্মিত ও ঘনজনবসতিপূর্ণ শিবিরে শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে মানবিক সংস্থা, সরকার, এবং শরণার্থী নিজেরদেরও অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। সরকার নির্দিষ্ট অবকাঠামো উন্নতিতে বিশেষ করে আশ্রয় এবং শিক্ষা গ্রহণে বাঁধা দেয় এই বলে যে এ শরণার্থী শিবিরগুলি ক্ষণস্থায়ী, এবং শরণার্থী সমস্যার সমাধান হচ্ছে তাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া।
অক্ষম এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মতো দুর্বল জনগোষ্ঠীরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে এবং মৌলিক সেবা এবং মানবিক সহায়তা পেতে তাদের অসুবিধা হয়।
মিয়ানমারের শরণার্থীদের নিরাপদে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় ব্যর্থ হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার, ঘন জনবসতিপূর্ণ শিবিরের অবস্থার সমাধান করার প্রচেষ্টায়, প্রথম পর্যায়ে ১০০,০০০ শরণার্থীদের বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। দ্বীপ জুড়ে বাঁধ নির্মাণের জন্য বহিরাগত ঠিকাদার নিয়োগ করে সরকার, তবে সেখানে বন্যা ও জোয়ারের ঝুঁকি রয়েছে বিশেষ করে বর্ষাকাল এবং ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে, সেইসাথে সেখানে স্থানান্তরকৃত শরণার্থীদের আশ্রয়, জীবিকা নির্বাহ ও স্বাধীনভাবে চলাচলের অভাব রয়েছে।
শ্রম অধিকার
বাংলাদেশ হাইকোর্ট আদেশ দেয় যে অগ্নিকাণ্ড ও ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দুটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটিএর অ্যালায়েন্সের কাজ শেষ করতে হবে এবং পরবর্তিতে ১৮ ই নভেম্বর ২০১৮ এর মধ্যে তাদের কাজ সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্স দ্বারা প্রকাশিত স্বচ্ছ প্রতিবেদনের তুলনায় সরকার তার অগ্নিকাণ্ড এবং ভবন নিরাপত্তা পরিদর্শন ও অগ্রগতির বিষয়ে কোন প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। সরকার পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি করেছে, কিন্তু এ মজুরি বৃদ্ধি অপর্যাপ্ত বলে শ্রমিকেরা প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।
নারী ও মেয়েশিশুর অধিকার
বিশ্বে শিশু বিবাহের সর্বোচ্চ হারের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০৪১ সাল নাগাদ শিশু বিবাহ চর্চা বন্ধ করার অঙ্গীকার করা সত্ত্বেও সরকার এখনও অর্থপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেনি। ১৮ বছরের আগে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ করে মেয়েদের বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া আইনটি এখনও রয়েছে।
যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ, নির্যাতন, এবং অ্যাসিড আক্রমণের বিরুদ্ধে নারীদের সুরক্ষা করতে সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করতে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
যৌন অভিযোজন এবং লিঙ্গ পরিচয়
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন হিজরাদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে বৈধ স্বীকৃতি দেয়া (কখনও কখনও উভয়লিঙ্গকে মহিলা হিসাবে উল্লেখ করা হয়), রাষ্ট্রীয় সুবিধাগুলিতে নীতিমালা প্রয়োগ দুর্বল ছিল এবং যৌন ও লিঙ্গ সংখ্যালঘুরা প্রতিনিয়ত চাপ ও হুমকির মুখে আছে।
যৌন এবং লিঙ্গ সংখ্যালঘুদের তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ভিত, ধর্মীয় চরমপন্থীদের দ্বারা সংখ্যালঘুদের উপর হামলার এ পরিবেশে তারা প্রতিনিয়ত ভয় নিয়ে বেঁচে থাকে যে যদি তাদের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে গণ্য করা হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিরক্ষা করার পরিবর্তে অস্বীকার করবে যে তাদের যৌন অভিযোজন বা লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।
মূল আন্তর্জাতিক অভিনেতা
২০১৮ সালের মে মাসে ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ চলাকালে বাংলাদেশ সরকার প্রস্তাবিত সুপারিশ অগ্রাহ্য করে, বিশেষ করে বক্তৃতা প্রদানকালে এবং সে সময়ে জোরপূর্বক নিখোঁজ ও হত্যাকাণ্ড ক্রমবর্ধমানহারে বৃদ্ধি পায়। সরকার ২০১৩ সালের পর্যালোচনায়ের পর অগ্রগতির বিষয়ে অনেক তথ্য সরবরাহ করেনি।
বাংলাদেশ ও মায়ানমার সফররত মিশনের জন্য আগ্রহ বৃদ্ধির কয়েক মাস পর নিরাপত্তা পরিষদ এপ্রিল মাসে উভয় দেশে ভ্রমণ করে। বাংলাদেশে, কাউন্সিল সদস্যরা কক্সবাজারে শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিল, যেখানে তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করেছিল।
জুলাই মাসে, মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেস এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বাংলাদেশের যৌথ সফর পরিচালনা করেন। ।তারা ঢাকায় সরকারি কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করে কক্সবাজারে গিয়েছিলন। সফরকালীন সময়ে, মহাসচিব ক্যাম্পের পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির জন্য দাতা দেশগুলির প্রতি আহ্বান জানান।
ভারত সরকার যখন আসাম রাজ্যে বেআইনী বসতি স্থাপনকারী বাংলাদেশিদের আটক ও নির্বাসনের পরিকল্পনা ঘোষণা করে তখন ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি হয়। ভারত বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এবং সেইসাথে বিরোধীদলের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছে।
চীন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের জন্য মায়ানমার সেনাবাহিনীকে দায়ী করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে কমিয়ে দেয় এবং এর পরিবর্তে শরণার্থী প্রত্যাবাসনকে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানায়, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসাবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করার কারনে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। শরণার্থী বিষয়ে চিনের এ প্রস্তাব মূলত মিয়ানমারের সাথে অন্যান্য আন্তর্জাতিক যোগসূত্র কমিয়ে আনবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার সদস্য রাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক দাতাদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থার উপর মনোনিবেশ করে এবং মানবাধিকার লংঘনের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জনসমক্ষে সমালোচনা করে।
এপ্রিল মাসে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক মানবাধিকার বিষয়ক পরামর্শের সময় ইইউ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং আন্তর্জাতিক শ্রম আইন মেনে চলার আহ্বান জানায় এবং বাণিজ্য ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির বিষয়টি মোকাবেলার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে।
সেপ্টেম্বরে ইইউ প্রতিনিধিদল ও সদস্য রাষ্ট্রগুলির প্রতিনিধি সুইজারল্যান্ড এবং নরওয়ে - ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বিধানগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা প্রকাশ এবং প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করতে এবং বিচার প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নীতিমালাকে দুর্বল করে দিতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান জানায় এবং ছাত্রদের প্রতিবাদে আক্রমণ করার সমালোচনা করে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থকরা আগস্টের শুরুতে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের গাড়ীবহরে আক্রমণ করে এবং তার গাড়িতে পাথর ছুঁড়ে।
আগস্ট ২০১৭ সাল থেকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবস্থিত ও স্থানান্তরিত বার্মিজ জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তাতে ৩৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি সরবরাহ করেছে।